এবং তাহারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে।”
Inflation is not a part of big-bang theory as we thought 15 years ago. On the contrary, the big-bang is the part of inflationary model’ ------ Andre Linde
বিগব্যাং শুধুমাত্র স্থান এবং সময় এর সৃষ্টি করে। সৃষ্টি করে একটি বাউন্ডারি। একটি মহাবিশ্ব। কিন্ত ইনফ্লেশন উদ্ভব ঘটায় অসংখ্য ভ্যাকুয়াম স্তরের আর সেই ভ্যাকুয়াম স্তরের কারনে ঘটে অসংখ্য বিগব্যা্গং ও অসংখ্য মহাবিশ্ব। এটাই আধুনিক বিজ্ঞানীদের মহাবিশ্ব সৃষ্টি নিয়ে ধারনা। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই মহাস্ফিফতি বা ইনফ্লেশন কেন ঘটে? গানিতিকভাবে হয়তো অনেকে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই ইনফ্লেশন কেনো শুরু হয় ? ইনফ্লেশনের পিছনে আদি কারন কি? কি হতে পারে ইনফ্লেশনের পিছনের ঘটনা ? এ সকল প্রশ্নের উত্তর খুজতে আধুনিক বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে কিছু সম্ভাবনার কথা ভাবছেন। তবে যে মূল বিষয়টা হলো ভাবা হচ্ছে সেটি হলো ‘স্ফীতির প্রাথমিক বীজ আসতে পারে আনুবীক্ষনিক আকারের কোন বিকষণমূলক পদার্থ থেকে।” যে বীজ মহাবিশ্ব সৃষ্টির কারন। এ্যালেন গুথ তার গবেষনায় দেখিয়েছিলেন মাত্র এক আউন্স ওজনের একটি ভর থেকে ইনফ্লেশন যাত্রা শুরু করতে পারে যার ব্যাস হতে পারে একটি প্রোটনের চেয়েও একশত কোটি গুন ছোট কিছু। স্ফীতির সেই ছোট বীজ ট্রিয়ন বর্নিত ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশনের সমান যা কোয়ান্টাম শুণ্যতা থেকে উদ্ভুত হতে পারে।

বিশিষ্ট বিজ্ঞানী আন্দ্রে লিন্ডের চিরন্তন স্ফিতী তত্ব এসে ইনফ্লেশন এর আদি কারন কে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুললো। তার মতে নিদীষ্ট সময় পর পর এই ইনফ্লেশন ঘটে। তার তত্ত্ব অনুযায়ী এ ধরনের স্ফীতি অবিরামভাবে স্ব-পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে প্রতি মূহুত্ত্ইে তৈরী করছে নতুন নতুন মহাবিশ্ব। আন্দ্রে লিন্ডের মতে মহাবিশ্ব ধ্বংশের পর কিছু একটা থেকে যায়। সেই থেকে যাওয়া বিষয়বস্তু পরবর্তীতে আরেক মহাবিশ্বে ট্রান্সফার হয়। তিনি তার লেখায় বলেন ‘মহাবিশ্ব যদি কখন ধ্বংশ হয়ে যাইও জীবনের মূল সত্ত্বাটি হয়তো টিকে থাকবে অন্য কোন মহাবিশ্বে অন্য কোন ভাবে।’

আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের চূড়ান্ত কিছু সীদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে চক্রাকার মহাবিশ্ব নামক একটি তত্ত্ব। পল স্টেইনহার্ট ও নেইল টুরকের চক্রাকার মহাবিশ্ব নামক একটি তত্ত্বে বলেছেন এই মহাবিশ্ব বারে বার সৃষ্টি এবং ধ্বংশ হয়। ষ্ট্রিং তাত্তিকদের উদ্ভাবিত মেমব্রেন এই সৃষ্টি ও ধ্বংশের কারন। তারা তাদের “Endless Universe” বইয়ের মাধ্যমে এসকল তথ্য জানিয়েছেন। তাদের মতে এ মহাবিশ্বের কোন শুরু নেই শেষ নেই। এ এক চলমান বিষয়, অনন্ত, অফুরন্ত। সৃষ্টি এবং ধ্বংশের চক্রে আবদ্ধ। এই মহাবিশ্ব যেমন একদা সৃষ্টি হয়েছিলো এবং আবারও তা হবে; শুরু করবে নতুন চক্রের। আজ থেকে ট্রিয়ন বছর পর আবারও শুরু হবে নতুন চক্রের। ঘটবে নতুন সূচনা। একেকটি চক্র একেকবার মহাবিশ্বকে সৃষ্টি এবং ধ্বংশ করে।

শুধু টিকে থাকে একটি চিরন্তন সত্ত্বা। মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর ধ্বংশ হয় কিন্তু ধ্বংশের পর জীবনের মূল সত্ত্বাটি ধ্বংশ হয় না। তা টিকে থাকে অন্য কোন মহাবিশ্ব সৃষ্টি হওয়ার মধ্য দিয়ে। তাই যদি হয়ে থাকে তাহলে এ বিষয়টি মেনে নিতে হয় মহাবিশ্ব ধ্বংশের পর একটি বিষয় টিকে থাকে যা চিরন্তন যা কখনও ধ্বংশ হয় না। টিকে থাকে চক্রের পর চক্র ধরে। যাকে আমরা অভিহিত করি সৃষ্টির মূল কারন আদি কারন। যার কোন ধ্বংশ নেই চিরন্তন এক সত্ত্বা। যে চেতনার প্রকাশ ঘটে শক্তি ও জ্ঞানের মহা সম্মিলন রুপে। প্রকাশ শেষে আবার ধ্বংশ হয়ে যায়। অবশিষ্ট থাকে শুন্য শক্তি যা আবার সৃষ্টির জন্য প্রতিক্ষারত।

বিশিষ্ট বিজ্ঞানী শন ক্যারল এর বক্তব্য মতে আমরা বা আমাদের মহাবিশ্ব উচ্চ এ্যানট্রপির বৃহত্তর কোন স্থান কাল থেকে এসেছি। আবার সকল জড়জগৎ ধ্বংশ হলে মুল সত্ত্বা উচ্চ এনট্রপিতে ফিরে যাবে। এখন উচ্চ এনট্র্রপির বৃহত্তর কোন স্থান কাল কি? একটি চেতনা মাত্র। সেই চেতনা হতে উদ্গত এই জগৎ সৃষ্টির শুরুতে শুধু চেতনাই ছিলো যা পরবর্তীতে নিজ ইচ্ছাশক্তিতে নিজেই নিজেকে এরুপে সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এই রুপ স্থির নয়। একটি নিদীষ্ট সময় পর তা ধ্বংশ হবে এবং ঠিক আগের উচ্চ এনট্র্রপির বৃহত্তর কোন স্থান কালে ফিরে যাবে।

মানুষ কি আবার কোথাও ফিরে যাই? এই প্রশ্নের আপত সমাধান ‘বায়োসেন্ট্রিজম’ তত্ত্ব। সম্প্রতি ‘সায়েন্স’ নামের এক জার্নালে এই তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। এই তত্ত্বে দেখানো হয়েছে, কিভাবে কোনো শক্তির বা বস্তুর বিপরীতমুখী পরিবর্তন ঘটতে পারে। অসীম কালে ও স্থানে মৃত্যুই শেষ কথা হতে পারে না। ‘আমি কে?’—শুধু এই অনুভূতিই মস্তিষ্কে ২০-ওয়াট শক্তি সঞ্চালন করতে পারে। এই শক্তি কি মৃত্যুর সময় বিলুপ্ত হয়ে যায়? মোটেই নয়! নতুন এই তত্ত্ব বলছে, এই শক্তি এক মহবিশ্ব থেকে আরেক মহাবিশ্বে সঞ্চালন হয়। আর এই তত্ত্বের সবচেয়ে বড় ভিত্তি শক্তির নিত্যতা সূত্র। এই সুত্র মতে শক্তির অবিনশ্বরতা। তাহলে মস্তিষ্কের ওই শক্তি ঝর্না মৃত্যুর পরে কোথায় যায়?

প্রিয় পাঠক, সমগ্র মহাবিশ্ব ধ্বংশের পর কিছু অবশিষ্ট থাকে। সে ফিরে যাই তাই উৎপত্তি স্থলে। উচ্চ এ্যানট্রপির বৃহত্তর কোন স্থান কালে জীবনের মূল সত্ত্বাটি ফিরে যাই। কিংবা ফিরে যাই শুন্য শক্তির গোপন কারখানায়। সেখান থেকে রিফাইন হয়ে আবার সৃষ্টি চক্রে ফিরে আসতেও পারে। তাই যদি হয় তাহলে আল কোরানের কথাই ঠিক। তোমরা আল্লার কাছেই প্রত্যাবর্তিত হবে জীবনের মূল সত্ত্বাটি ফিরে যাওয়াই সত্য। কারন আল কোরানও ঠিক নতুন করে আসমান জমিন সৃষ্টির বিষয়টি উল্লেখ করেছে।