আচ্ছা বলুন তো - কোন দেশের মানুষের যাদের বয়স ৪০/৫০ বছরের কম অথচ কোন কাজিন নাই? এর উত্তর টা পরে দেই। কোন কোন দেশের অধিকাংশ বাচ্চাদের চাচা মামা খালা ফুফু নাই তাহলে খালু ও ফুফাও নাই। উত্তরটা জাপানের ক্ষেত্রে বেশী প্রযোজ্য। ওদের শিশুদের বাবা আছে বাবার কোন ভাই বোন নেই, মা আছে মারও কোন ভাই বোন নেই।আবার দাদা দাদি নানা নানী চার জনেই জিবীত বয়স্ক ভাতা/পেনশন পায়। সবাই মেডিসিন ও খায়। কাজেই মেডিসিন হাসপাতালের ব্যবসা জমজমাট। আর এই যে অসহায় বাচ্চাটা সারাদিন বাসায় বসে একা একা কান্না করে ওকে ওর বড় ভাই বোন চাচা খালা ফুফু কেউ কোলে নিয়ে পাড়া বেড়ায় না আদরও করে না। কেননা ওর তো এসব কেউ নেই।শিশুটা কত বড় অভাগা। আমাদের গরিব দেশের শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগে কিন্তু কান্না করলেই সাথে সাথে হাউজ ওয়াইফ মা খালারা চাচারা ফুফুরা কোলে নেয়ার জন্য অস্হির হয়ে যায়।চাচা কান্ধে করে দোকানে নিয়ে মজা কিনে দেয়।


এখন চীনের এক সন্তান নীতির কারনে ওদের যাদের বয়স ৩০ এর কম তাদের কারও কোন কাজিন নাই। ওরা মামার বাড়ি যায় কিন্তু মামা নেই।এই সমস্ত শিশুরা কতটা নিঃসংগতায় বড় হয় ভালবাসা পায়না কাজেই কাউকে ভালবাসবে কিভাবে, বাবা মা দুইজনেই যার যার ক্যরিয়ার নিয়ে ব্যাস্ত।বাচ্চাটা এদের কাছে বিশাল একটা ঝামেলা। এক সময় ইউরোপের দেশে অর্থাৎ উন্নত দেশে কোন কর্মজিবী নারী বাচ্চা নিলে তেমন ছুটি পেত না বাচ্চাটিকে দেখাশুনা করার। অনেক সময় প্রাইভেট কোন কোম্পানির কর্মজিবী নারীর প্রেগন্যন্ট হলে তার ছুটি তো দুরের কথা চাকুরিটাই চলে যেত। তারপর ধীরে ধীরে বা্চ্চাটা ৩/৪ বছর হলে দেখা যেত যে বাচ্চার বাবা আরেকটা মেয়ের সাথে লিভটুগেদার করছে বাচ্চা ও বা্চ্চার মাকে কোন ভরন পোষন দিতে নারাজ। কেননা বাচ্চার বাবা আরেকজন যে কর্মজিবী নারীর সাথে সমান খরচে একটা ফ্ল্যাট শেয়ার করে থাকছে, দুই জনেই উইকডেতে নাইটক্লাবে যাচ্ছে। আনন্দে দিন কাটাচ্ছে। আর এই লিভটুগেদার করা নারীও যানে যে বাচ্চা নিলে তার এই ছেলে বন্ধুটাও তাকে ছেরে চলে যাবে।অদুর ভবিষ্যতে তার ক্যারিয়ার সংসার আর সুদুর ভবিষ্যতে তার এই বাচ্চাটাও তার কোন কাজে আসবে না। কাজেই বাচ্চাটা ওদের কাছে কতটা ঝামেলার তা আশাকরি আপনাদের বুঝাতে পেরেছি। আর দুর্ভাগা বাচ্চার কথা কি আর বলব। কাজেই ওদের একটা প্রজন্ম বাচ্চা বিমুখ হয়ে আর আনন্দ মোজ মাস্তিতে মজে গেল। এখন চীনের একটা পরিসংখ্যান দেখা যাক। ২০১৬ সালে এক সন্তান নীতি তুলে দেয়ার ফলে তাদের বাচ্চা হল এক কোটি সত্তর লাখ যা ২০১৫ সালে এক কোটি ৬২ লাখ থেকে আট লাখ বেশি। তার পর থেকে ২০১৭ সালে এক কোটি ৭৬ লাখ, ২০১৮ সালে এক কোটি ৫২ লাখ, ২০১৯ সালে এক কোটি ৪৬ লাখ, ২০২০ সালে এক কোটি ২০ লাখ, ২০২১ সালে এক কোটি ৬ লাখ এবং গত বছর ২০২২ সালে শুধু ৯৫ লাখ ৬০ হাজার বাচ্চাহল। আর জাপানে একটা গ্রামে তো গত ৩০ বছরে কোন বাচ্চাই হয় নাই, তাই উক্ত গ্রামে একটা নবজাতকে দেখতে মানুষ হুমরি খেয়ে পড়ল। যে নবজাতক কে দেখতে কেমন তারা ভুলেই গিয়েছিল অনেকেই।


এখন আসি এর এফেক্ট কেমন অর্থনীতি ও সামাজিক ভাবে। দুইজন ব্যবসায়ী পাশাপাশি দোকান দিছে একজন কুকুর বিড়ালের খাবার দাবার ইত্যাদি বেচে আরেকজন মানুষের বাচ্চার খেলনা প্যাম্পাস ইত্যাদি বেচে। দেখা গেল যে কুকুর বিড়ালের রসদের ব্যবসায়ী ব্যবসায় লালে লাল হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন আর এদিকে আরেক ব্যবসায়ী দুপুর হয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও একটা প্যাম্পাস ও বিক্রি করতে পারেনি সারা দিনে। অনেক শিশুদের জামাকাপড়ের দোকানে বগ্নিও হয় না কোন কোন দিন। প্রায় প্রতি দুই দিনে ৩ টা করে প্রাইমারি স্কুল বন্ধ হয়ে যায় জাপানে। চীনে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি রেডি ফ্ল্যাট বিক্রি বা ভাড়া না হয়ে ভুতুরে নগরে পরিনত হয়েছে ইতিমধ্যেই। এই সমস্ত উন্নত দেশে হাউজিং সেক্টর মুখ থুবড়ে পরেছে অনেক আগেই। তাইতো তারা হাউজিং লোন এক শতাংশ করেছে। আমেরিকা কানাডা জার্মানী তার অর্থনীতি গতিশীল রাখতে যথাক্রমে বছরে ১৫ লাখ, ৪ লাখ ও ৫/৬ লাখ করে ভিনদেশী লোককে নতুন করে

সিটিজেনশিপ অফার করছে। কিন্তু জাপানের ও চীনের মত এত ভয়াভহ অবস্হা আর কোন উন্নত দেশের হয় নাই, ৩/৪ দিন আগে দেখলাম জাপানে টয়োটা তাদের উৎপাদন সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে, টয়োটা মিতসুবিসির মত বড় বড় কোম্পানি জাপানের সরকারকে চাপ দিচ্ছে যে ভিনদেশী কর্মিনিয়োগে আইন শিথিল করতে। এমনকি ভিনদেশী নাগরিকদের স্হায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি দিতে । কিন্তু গনতন্ত্রের ফাদে যার পা দিয়েছে তাদের এই সমস্যা থেকে কোন পরিত্রান নাই।

জাপানি জাতীটা এতই অহংকারী ও জাতীয়তাবাদি যে তারা তাদের দেশে ভিনদেশী কে সহ্যই করতে পারেনা। আর এশিয় আফ্রিকার চারাল কৃষক তাদের ভাষায় অসভ্য জনগোষ্ঠী জাপানে নাগরিকত্ব পাবে এটা তারা ভাবতেও পারছে না। কাজেই উপায়। উপায় হল জাপানী মায়েদেরকে বল যে বেশীর থেকে বেশী বাচ্চা নেউ। কিন্তু এত স্বাধীন এত শিক্ষিত ক্যারিয়ার নিয়ে যারা ভাবে তারা নিবে সন্তান?

জাপানী বাবারাও তো এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে না তাদের গার্লফ্রেন্ড কে যে সন্তান নাও আমি তোমাকে বিয়ে করব, তোমাকে বা তোমাদের ছেরে যাবনা কোন দিন আমি আরও কঠোর পরিশ্রম করে উপার্জন করব তোমার ও তোমার সন্তানের ভরন পোষন ও উন্নত জীবনের জন্য।

জাপানী মায়েরা জানে যে সন্তান নিলেও তার বয় ফ্রেন্ড উরাল দিবে।কেননা সে কাজ কে ভাল বেসে অফিস ছুটির দিনও ডিউটি করে। জাপানি নিতিনির্ধারকগন মিটিংএর পর মিটিং করে কিভাবে বাচ্চার সংখ্যা বাড়ানো যায়, কেন তারা বাচ্চা নিতে চাচ্ছেনা ইত্যাদি প্রশ্নের কোন জবাব পায়না। তাই তারা নানা রকম প্যাকেজ চালু করল। আমাদের দেশেরে অরিয়ন গ্রুপের কোন কলিগদের মধ্যে বিয়ে হলে একজনের চাকুরী চলে যায়। আর জাপানের কোম্পানিতে কলিগরা পরস্পর যাতে ঘুরতে যেতে পারে ডেটিং করতে পারে সেই ব্যবস্হা করে দেয় ছুটিতে যেতে চাপ দেয়। বাচ্চা নিলে ইউরোপ আমেরিকায় ১০ বছর আগেও ছুটি দিত ৩ মাস সর্বোচ্চ পরে তা ৬ মাস এবং আরও পরে তা ৯ মাস ও এখন শুধু মাকেই নয় বাবাকেউ ছুটি দিচ্ছে পূর্ন বেতন সহ। কিন্তু তার পরেও ক্যারিয়ার ও আমোদ প্রমোদে ব্যস্ত মায়েরা বাচ্চা নিচ্ছে না।কয়দিন পর পর গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড পাল্টায়, কাজেই এখানে আবার বাচ্চা কিসের। একটা থাপ্পর দিলে নারী নির্যাতনের মামলা আর কল্যানপুর শহীদমিনার রোডের একেকটা ব্যাডাই, একদিন রিসশা চালায়/রাজমিস্ত্রির কাজ করে তো তো বাকি

ছয়দিন ঘরে বসে থাকে আর বউ মারে, আর বউরা কত স্বামি ভক্ত যে মার ও খায় আবার ৩/৪/৫ বাসায় ছুটা বুয়ার কাজ করে সংসার চালায়।

তাই কবির ভাষায় এমন সুন্দর দেশটি কোথাও খুজে পাবে নাকো তুমি, এযে আমার জন্মভুমি। তারপর কবি নিরব। এখানেই নারী স্বাধীনতার প্রশ্ন। উন্নত দেশের নারীরা পরকাল বিশ্বাস করে না, কোন ধর্ম মানে না, পুরুষরাও তাই, কিন্তু পুরুষরাতো আর গর্ভপতি হয় না

তাই আমি বার বার বলছি নারীর কথা মায়েদের কথা তারা আমোদ প্রমোদে মজে গেলে একটা জাতী ইতিহাস হয়ে যেতে পারে এই ইতিহাস আবার সেই ইতিহাস নয় সেই দিন বেশী দুরে নয় যখন পৃথিবীর মানুষ বলবে জাপান নামে একটা জাতী ছিল অনেক পুবে।

যে সব দেশের নারীরা স্বাধীন ও গ্র্যাজুয়েট তার ঢাকার কল্যানপুর শহীদ মিনার রোডের নারীদের মত হবে না নিশ্চয়ই।

আমি আবার নারী স্বাধীনতার বিপক্ষে না আবার এরকম পক্ষেও না। আমাদের দেশে এত এত গ্র্যাজুয়েট বেকার থাকতে কেন নারীরা চাকুরি করবে। নারিরা চাকুরি করে কি বেকার পুরুষকে বিয়ে করে ভাত কাপড় দেয়? উন্নত দেশের বিভিন্ন গবেষনা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় নানান গবেষনা চালিয়েও পরিত্রানের উপায় খুজে পায়না। তাদের অনেক গবেষনা আমি পরেছি কিন্তু একটাতেও এর কারন হিসাবে নারী স্বাধিনতার অবাধ প্রয়োগের অপব্যবহার ও তাদের লাইফস্টাইল ই যে দায়ী তা উল্লেখ নেই। আপনি ভাল একটা চাকুরি করেন বিয়ে করেছেন ঢাকার মেয়ে। থাকেন ঢাকায় ছোট আপনাদের পরিবারটা, কাজেই দেখবেন একটি বাচ্চার বেশী নিলে কি কি হবে তা আপনার এই শিক্ষিত ঢাকার বউটা আপনাকে বুঝাবে নানান যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করবে যেমন খরচ বেড়ে যাবে ব্যাংকে টাকা জমাতে পারব না বেশী একটা ফ্ল্যাট বুকিং দিতে পারব না কোনদনি ইত্যাদি ইত্যাদি। আর গ্রামের কুলসুম বেগম কৃষক বা গিরোস্তের মেয়েকে বিয়ে করে বছর বছর বাচ্চা নিলেও না করবে না কেননা বাচ্চাই তার বিনোদন বাচ্চাই তার ভবিষ্যত।


এবার আসি গনতন্ত্রের ফাদ আসলে কি?

চলবে ..